নিজস্ব প্রতিবেদক:
অনলাইনে অর্ডার করলেই কম দামে কিংবা বিশেষ মূল্য ছাড়ে পাওয়া যেত আইফোন। কম দামে আইফোন দেখে অনেকেই তা লুফে নিতেন। দামে কম হওয়ায় কিংবা ছাড় থাকায় ক্রেতার সংখ্যাটাও অনেক বেশি। এসব আইফোন বিক্রি করে প্রতিদিন লেনদেন হতো কয়েক লাখ টাকা। তবে ক্রেতারা মোটা অঙ্কের টাকা দিয়ে আইফোন কিনলেও সবই ছিলো নকল। রাজধানীর মোতালেব প্লাজার একটি দোকান ভাড়া নিয়ে চলছিলো আইফোন তৈরির কাজ।
কর ফাঁকি দিয়ে আনা আইফোন ও নকল মোবাইল তৈরির সরঞ্জাম বিক্রির অভিযোগে রাজধানীর হাতিরপুলে মোতালেব প্লাজায় অভিযান চালিয়ে ১২ লাখ টাকা জরিমানা করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। জব্দ করা হয়েছে মোবাইল ও সরঞ্জাম।
বৃহস্পতিবার (১৯ বৃহস্পতিবার) দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত র্যাব সদর দফতরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. সারওয়ার আলমের নেতৃত্বে অভিযানে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) সহযোগিতা করেন।
র্যাব সূত্র জানায়, আইটাচ বিডিকে এক লাখ ৫০ হাজার, মোল্লা টেলিকমকে ৫ লাখ, আসলাম এন্টারপ্রাইজকে ১ লাখ, বিসমিল্লাহ মোবাইলকে ৫০ হাজার, আলাপ টেলিকম-১ কে ২ লাখ ও আলাপ টেলিকম-২ কে ২ লাখসহ মোট ১২ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।
র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. সারওয়ার আলম জানান, একটি চক্র নকল মোবাইলের সরঞ্জাম তৈরি করে দীর্ঘদিন ধরে বাজারজাত করে আসছে। এসব নকল সরঞ্জামের কারণে মোবাইলের যেমন ক্ষতি হচ্ছে, তেমনি দুর্ঘটনাও ঘটছে। এছাড়া কর ফাঁকিতে মোবাইল ও মোবাইল সরঞ্জামাদি আমদানি করায় রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার।
তিনি বলেন, বেশ কিছু মোবাইল সেট পাওয়া গেছে যেগুলো নকল। এছাড়া আরও কিছু মোবাইল পাওয়া গেছে যেগুলো ট্যাক্স ছাড়া নিয়ে আসা হয়েছে। মোবাইলের ব্যাটারিসহ নকল সরঞ্জামাদি ক্রয়ের কারণে ভোক্তা সাধারণ ও ব্যবহারকারীগণ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন, যা প্রতারণা ও ভোক্তা আইনে অপরাধ।
এসব মোবাইল ব্যবহারের কারণে হাই রেডিয়েশনে সাধারণ ব্যবহারকারীরা স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়ছে জানিয়ে সারওয়ার আলম আরও বলেন, অল্প সময়ে এসব ফোন নষ্ট হয়ে যাওয়ায় আমাদের ই-ওয়েস্টে বা ইলেক্ট্রনিকস বর্জ্যের পরিমাণ অনেক বাড়িয়ে দিচ্ছে। একটি অরিজিন্যাল মোবাইল সেট তিনবছর থেকে পাঁচবছর যাবে কিন্তু ক্লোন বা নকল সেট, যন্ত্রাংশ ব্যবহারের ফলে একমাস বা ছয়মাসের মধ্যে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। যেটা আমাদের জন্য অনেক বড় চ্যালেঞ্জ। এসব কারণে আমরা অভিযান পরিচালনা করছি এবং এই ধরনের অভিযান অব্যাহৃত থাকবে।
ক্রেতারা কিভাবে বুঝবে মোবাইল আসল নাকি নকল? এমন প্রশ্নে সারওয়ার আলম জানান, প্রথম দেখাতে আসল নকল বোঝা অনেক কঠিন। তবে বিটিআরসির আইএমইআই নম্বর চেক করার জন্য একটি নম্বর রয়েছে। আইএমইআই লিখে ওই নম্বরে এসএমএস করলে ফিরতি ম্যাসেজেই বোঝা যায় মোবাইলটি আসল নাকি নকল।
র্যাবের কর্মকর্তা জানান, যেসব মোবাইল জব্দ করা হয়েছে সব আমরা ধ্বংস করে দিবো। তাছাড়া এসব মোবাইল দিয়ে বিভিন্ন ক্রিমিনাল অ্যাক্টিভিটিস্ট কর্মকাণ্ড ঘটছে। বিভিন্ন সময় আইএমইআই নম্বর পরিবর্তন করে অপরাধ কর্মকাণ্ড চলছে। একইসঙ্গে সরকারের বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হারাচ্ছে।