যেখানে খালি জায়গা আছে সেখানেই গাছের চারা রোপণ করুন: প্রধানমন্ত্রী

img

নিজস্ব প্রতিবেদক:

পরিবেশ রক্ষায় যেখানে খালি জায়গা আছে সেখানেই গাছের চারা রোপণের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, "আমাদের লক্ষ্য দেশ, জনগণ এবং প্রকৃতিকে প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে সুরক্ষিত করা।”

বুধবার সকালে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বিশ্ব পরিবেশ দিবস ও পরিবেশ মেলা-২০২৪ এবং জাতীয় বৃক্ষরোপণ অভিযান ও বৃক্ষমেলা-২০২৪ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।  

তিনি বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের জন্য ২০২৩ এবং ২০২৪ সালের বঙ্গবন্ধু পুরস্কার, জাতীয় পরিবেশ পুরস্কার-২০২৩ এবং বৃক্ষরোপণের জন্য প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় পুরস্কার-২০২২ ও ২০২৩ বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন।

এছাড়াও সামাজিক বনায়ন কর্মসূচির সুবিধাভোগীদের মধ্যে চেক বিতরণ করা হয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “প্রকৃতিকে রক্ষা করতে হবে, কারণ এটি আমাদের সবকিছু দেয়। আমরা যদি সুস্থ জীবনযাপন করতে চাই তবে আমাদের একটি সুন্দর পরিবেশ দরকার এবং প্রত্যেকেরই এর দিকে মনোনিবেশ করা উচিত।”

প্রকৃতি ও পরিবেশ রক্ষায় ঘরের ছাদে বা অফিসে যেখানেই থাকুক না কেন খালি জায়গায় চারা রোপণ করতে সবার প্রতি আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। বলেন, “আমি আপনাদের সবাইকে অনুরোধ করছি, যেখানেই খালি জায়গা আছে সেখানে চারা লাগান। ফল ধরাতে পারেন, ফলদ গাছ লাগাতে পারলে, কাঠ বিক্রি করে যথেষ্ট অর্থ পাওয়া যায়, কাঠের গাছ লাগালে, ভেষজ গাছ থেকে ওষুধও তৈরি হয়।

“প্রত্যেকেরই অফিস, স্কুল, কলেজ, মসজিদ-মাদ্রাসার প্রাঙ্গণ এমনকি বাড়ির ছাদেও গাছ লাগাতে হবে, যে গাছ আপনাকে আরাম দেয়, আপনি ছায়া পেতে পারেন, নিজের বাগানের ফল ও শাকসবজি খেয়ে আত্মতৃপ্তি পাওয়া যায়” বলেন শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত বিএনপি-জামায়াত জোট এবং তার পরবর্তী দুই বছর এই ধারাবাহিকতা রক্ষা করা হয়নি। ২০১৩ সালে সরকার উৎখাতের আন্দোলনের নামে মানুষকে যেমন হত্যা করা...তাছাড়া বাস, ট্রাক, গাড়ি, রেল, লঞ্চ, সেগুলো আগুনে জ্বালিয়ে দেওয়া আর বৃক্ষ নিধন করা হয়। লক্ষ লক্ষ বৃক্ষ কেটে ফেলে দেয় জামায়াত-বিএনপি। আমরা যেখানে গাছ লাগিয়েছে সেগুলো তারা ধ্বংস করেছে। এটাই হচ্ছে দুর্ভাগ্যের বিষয়।

তিনি আরও বলেন, বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি পালনের জন্য ১৯৮৪ সালে আওয়ামী লীগ সিদ্ধান্ত নেয় এবং আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন কৃষক লীগের ওপর দায়িত্ব দেওয়া হয়। মূল দল আওয়ামী লীগ এবং তার সহযোগী সংগঠনের প্রত্যেকটা সদস্য বৃক্ষরোপণ করবে। আমাদের নির্দেশ ছিল এবং সেই নির্দেশনা আমরা এখনও পালন করে যাচ্ছি।  

শেখ হাসিনা বলেন, এ দেশের মানুষকে রক্ষা করা আমাদের কর্তব্য। জলবায়ু পরিবর্তনের যে বিরূপ প্রভাব, তা থেকে দেশকে আমরা মুক্ত করতে চাই। সেদিকে লক্ষ্য রেখে আমরা বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছি। যে পদক্ষেপগুলো জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু নিয়েছিলেন। 

তিনি বলেন, জাতির পিতা ১৯৭২ সালে পরিবেশ সংরক্ষণের জন্য বিভিন্ন কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করেন। ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে একটা সবুজ আচ্ছন্ন পরিবেশ তৈরির পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। ১৯৭২ সালের ১৬ জুলাই তিনি সেখানে বৃক্ষরোপণ সপ্তাহ উদযাপন করেন। বৃক্ষরোপণের জন্য মানুষকে ব্যাপকভাবে উদ্বুদ্ধ করেন। কক্সবাজারে সমুদ্র সৈকতে যে ঝাউ বন সেটি জাতির পিতার উদ্যোগে রোপণ করা হয়। তাছাড়া আমাদের দ্বীপ অঞ্চল, বিশেষ করে চরাঞ্চলগুলোতে ব্যাপকভাবে বৃক্ষরোপণ করা এবং সেখানে প্রত্যেক প্রজাতির পশুপাখি জোড়ায় জোড়ায় ছেড়ে দেওয়া হয়। সেটা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শুরু করে দিয়েছিলেন।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী, মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি দীপঙ্কর তালুকদার ও সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ প্রমুখ।