নিজস্ব প্রতিবেদক:
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেছেন, দেশের মানুষের ভোটাধিকার ব্যাপকভাবে ক্ষুণ্ন হয়েছে। ফলে দেশের মানুষ ভোটের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে। দেশের মানুষ স্বাধীনভাবে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে চায়। ভোটের সুষ্ঠু পরিবেশ, ভোটাধিকার ও সুষ্ঠু রাজনীতি চায় দেশের মানুষ। আমরা সংসদে, বক্তৃতা ও বিবৃতি দিয়ে গণমানুষের ভোটাধিকারের দাবিতে সোচ্চার আছি। বিদেশিরাও ভোটাধিকারের প্রশ্নে জোড়ালো ভূমিকা রাখছে। এ কারণেই সব বিষয়ে একটি অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়েছে।
বুধবার জাতীয় পার্টির বনানী কার্যালয়ে ময়মনসিংহ জেলার উপজেলা প্রতিনিধি সভায় তিনি এসব কথা বলেন। এসময় সাবেক যুগ্ম কর কমিশনার জহিরুল ইসলাম জহির জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান এর হাতে ফুল দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পার্টিতে যোগ দেন।
রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্র দেশের জন্য ভয়াবহ অবস্থা সৃষ্টি করতে পারে এমন আশঙ্কা প্রকাশ করে জিএম কাদের বলেন, ক্লিন এনার্জির কারণে এক সময় পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের কদর ছিলো। এখন অনেকেই আর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র তৈরি করছে না। আবার যাদের তৈরি আছে তারাও বন্ধ করে দিচ্ছে। স্বল্প খরচ ও পরিবেশের ক্ষতি হবে না এমন ভাবনা থেকেই পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিলো। কিন্তু এটা থেকে যে বিকিরণ হয় তা স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র একটি বিপজ্জনক প্রযুক্তি। দুর্নীতি না হলে এটি সস্তা বিদ্যুৎ হতে পারে। একই কোম্পানি থেকে ভারত একই মডেলের দুটি পাওয়ার প্লান্ট তৈরি করেছে দুই হাজার মেগাওয়াটের পাঁচ বিলিয়ন ডলার খরচে। আর আমাদের দেশে এই কোম্পানি থেকে ২৪ শো মেগাওয়াটের দুটি স্থাপনে এখন পর্যন্ত খরচ হয়েছে ১৩ বিলিয়র ডলারের বেশি। এই খরচ ১৬ বিলিয়ন পর্যন্ত হতে পারে। যে প্রকল্প তৈরিতে ভারত ৬ থেকে ৭ বিলিয়ন ডলার খরচ করে, সেই প্রকল্প করতে আমাদের খরচ হচ্ছে ১৫ থেকে ১৬ বিলিয়ন। বেশি খরচ হওয়ার কারণে এই বিদ্যুৎ তো সস্তা হবে না।
বর্তমান সরকার পার্টির অভ্যান্তরে গ্রুপিং সৃষ্টি করে আমাদের দুর্বল করতে অপচেষ্টা চালাচ্ছে। জাতীয় পার্টির একক নেতৃত্ব প্রশ্নবিদ্ধ করতে চাচ্ছে সরকার। আমাদের মাতৃতুল্য বেগম রওশন এরশাদকে জিম্মি করে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে। জাতীয় পার্টি কখনো আপসের রাজনীতি করবে না। যারা দলের ঐক্য ও শৃংখলা পরিপন্থি কাজ করবে তাদের স্থান আর জাতীয় পার্টিতে হবে না। পার্টির স্বার্থে কোনো দ্বিধার কোনো অবকাশ নেই। জাতীয় পার্টির ভেতরে অনাস্থার পরিবেশ সৃষ্টি করতে চাইলে সরকারের বিরুদ্ধে আমরা রুখে দাঁড়াব। অস্তিত্ব আর অধিকার রক্ষার স্বার্থে আমরা আর কারও সঙ্গে আপস করব না।
উপজেলা প্রতিনিধি সভায় বক্তব্য দেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা মুজিবুল হক চুন্নু এমপি, প্রেসিডিয়াম সদস্য ও ময়মনসিংহ জেলা আহ্বায়ক ফখরুল ইমাম এমপি, ভাইস চেয়ারম্যান ও ময়মনসিংহ জেলা সদস্য সচিব সালাউদ্দিন আহমেদ মুক্তি, ভাইস চেয়ারম্যান ও ময়মনসিংহ মহানগর আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর আহমেদ, সদস্য সচিব আবু মুসা সরকার, ময়মনসিংহ জেলা দফতর সম্পাদক ওয়াহিদুজ্জামান আরজু, হালুয়াঘাট উপজেলা সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম পাপ্পু, শহীদুল ইসলাম স্বপন মন্ডল। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট মো: রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা ড. নুরুল আজহার শামীম, ডা: মোস্তাফিজুর রহমান আকাশ, মো. খলিলুর রহমান খলিল, ভাইস চেয়ারম্যান জসীম উদ্দিন ভূঁইয়া, সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য মো. হুমায়ুন খান, মাখন সরকার, মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল, অ্যাডভোকেট ইউসুফ আজগর, এমএ রাজ্জাক খান, গোলাম মোস্তফা, হাফিজ উদ্দিন মাস্টার, ইঞ্জিনিয়ার এলাহান উদ্দিন, যুগ্ম সম্পাদক বাহাদুর ইসলাম ইমতিয়াজ, আবু সাদেক বাদল, মাহমুদ আলম, সমরেশ মন্ডল মানিক, কেন্দ্রীয় নেতা আবু সাঈদ আজাদ খুররম ভূঁইয়া, মাহমুদুল হক মনি, মো. শরীফ উদ্দিন, ময়মনসিংহ জেলা নেতা অধ্যক্ষ এমদাদুল হক খান, আব্দুল মজিদ, আলহাজ্ব নূর উদ্দিন আহমেদ খান সুলতান, কাউন্সিলর মির্জা কালাম প্রমুখ।