জামিন পেয়েছেন সম্রাট, মুক্তিতে বাধা নেই

img

নিজস্ব প্রতিবেদক:

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের বহিষ্কৃত সভাপতি ইসমাইল হোসেন সম্রাটের জামিন মঞ্জুর করেছেন আদালত। এর আগে তিনি আরও তিনটি মামলায় জামিন পেয়েছেন। তার বিরুদ্ধে থাকা চার মামলাতেই জামিন হওয়ায় সম্রাটের মুক্তি পেতে আর কোনো আইনি বাধা নেই।

জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় আজ সোমবার ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬ এর বিচারক আল আসাদ মো. আসিফুজ্জামান শুনানি শেষে ১০ হাজার টাকা মুচলেকায় সম্রাটের জামিন মঞ্জুর করেন।

অসুস্থ বিবেচনা করে আদালত তাকে আগামী ১৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত জামিন দেন। আদালত দুই শর্তে সম্রাটের জামিন দেন। শর্ত দুটি হলো- সম্রাটকে পাসপোর্ট জমা দিতে হবে এবং তিনি বিদেশ যেতে পারবেন না।

সম্রাটের বিরুদ্ধে করা চার মামলার মধ্যে এর আগে তিন মামলায় জামিনে আছেন তিনি। সর্বশেষ মামলায়ও আজ জামিন পেলেন। এখন তার কারামুক্তিতে আর বাধা নেই বলে জানান আইনজীবী।

আজ সকালে সম্রাটকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএসএমইউ) থেকে আদালতে হাজির করা হয়।

এর আগে ১১ আগস্ট সম্রাটের জামিন শুনানি ও মামলার চার্জগঠন শুনানির জন্য দিন ধার্য ছিল। সম্রাট অসুস্থ থাকায় কারা কর্তৃপক্ষ তাকে আদালতে না পাঠিয়ে কাস্টডি ওয়ারেন্ট (হাজতি পরোয়ানা) পাঠান। এরপর ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬ এর বিচারক আল আসাদ মো. আসিফুজ্জামান তার জামিন শুনানি ও চার্জগঠন শুনানির জন্য ২২ আগস্ট দিন ধার্য করেন।

এই মামলায় এর আগে গত ১১ মে সম্রাটকে জামিন দিয়েছিলেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬ এর বিচারক আল আসাদ মো. আসিফুজ্জামানের আদালত। সেদিনই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএসএমইউ) প্রিজন সেল থেকে কারামুক্তি পান সম্রাট।

বিচারিক আদালতের দেওয়া সম্রাটের জামিন বাতিল চেয়ে গত ১৬ মে হাইকোর্টে আবেদন করে দুদক। ১৮ মে সম্রাটের জামিন বাতিল করেন বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ। একই সঙ্গে সাত দিনের মধ্যে তাকে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেওয়া হয়।

গত ২৪ মে আইনজীবীর মাধ্যমে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন সম্রাট। অন্যদিকে দুদকের আইনজীবী তার জামিনের বিরোধিতা করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬ এর বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে জামিন শুনানির জন্য ৯ জুন দিন ধার্য করেন।

গত ২১ জুন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬ এর বিচারক আল আসাদ মো. আসিফুজ্জামানের আদালতে সম্রাটের জামিন শুনানি ও মামলার চার্জগঠন শুনানির জন্য দিন ধার্য ছিল। ওই দিন সম্রাট অসুস্থ থাকায় কারা কর্তৃপক্ষ হাজতি পরোয়ানা পাঠালে বিচারক জামিন ও চার্জগঠন শুনানির জন্য ৬ জুলাই দিন ধার্য করেছিলেন।

এরই ধারাবাহিকতায় ১১ আগস্ট সম্রাটের জামিন শুনানি ও মামলার চার্জগঠন শুনানির জন্য দিন ধার্য ছিল। সম্রাট অসুস্থ থাকায় এরপর ২২ জুলাই দিন ধার‌্য দিন ধার‌্য করেন আদালত। এদিন আদালত জামিন মঞ্জুরের আদেশ দিলেন।

এর আগে সম্রাট আরও তিনটি মামলা জামিন পান। রমনা থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় গত ১১ এপ্রিল জামিন পান সম্রাট। এর এক দিন আগে ১০ এপ্রিল অর্থপাচার ও অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আইনের পৃথক দুটি মামলায় ঢাকার দুটি আদালত তার জামিন মঞ্জুর করেন।

সারা দেশে ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান চলাকালে ২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর সম্রাট ও তার সহযোগী তৎকালীন যুবলীগ নেতা এনামুল হক ওরফে আরমানকে কুমিল্লা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

এরপর তাকে নিয়ে কাকরাইলে সম্রাটের অফিসে অভিযান চালায় র‌্যাব। সেখান থেকে অন্যান্য জিনিসের সঙ্গে একটি ক্যাঙ্গারুর চামড়া জব্দ করা হয়। বন্য প্রাণী সংরক্ষণ আইনে ভ্রাম্যমাণ আদালত তাৎক্ষণিক সম্রাটকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেন।

জ্ঞাতআয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ওই বছরের ১২ নভেম্বর সম্রাটের বিরুদ্ধে দুদকের করা মামলায় দুই কোটি ৯৪ লাখ ৮০ হাজার টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়।

পরের বছর ২০২০ সালের ২৬ নভেম্বর এ মামলায় আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় দুদক। অভিযোগপত্রে সম্রাটের বিরুদ্ধে ২২২ কোটি ৮৮ লাখ ৬২ হাজার ৪৯৩ টাকা জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়।