নিজস্ব প্রতিবেদক:
রাজধানীর উত্তরায় বিআরটি প্রকল্পের গার্ডার পড়ে পাঁচজনের মৃত্যু ও দুজন আহত হওয়ার ঘটনায় করা মামলায় ক্রেনচালকসহ ১০ জনকে রিমান্ডে নেয়া হয়েছ। শুক্রবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাহাবুব আহমেদ এই রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উত্তরা (পশ্চিম) থানার পরিদর্শক মোহাম্মদ ইয়াসিন গাজী বলেন, তিন আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ডে আবেদন করা হয়। ক্রেনচালক আল আমিন, সহকারী রাকিব হোসেন ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সিজিজিসির সেফটি ইঞ্জিনিয়ার জুলফিকার আলীকে। তবে শুনানি শেষে আদালত প্রত্যেকের চার দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছে। আর বাকি সাত আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করা হলে, আদালত প্রত্যেককে দুই দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
রিমান্ডে নেয়া আসামিরা হলেন— ক্রেনচালক আল আমিন, চালকের সহকারী রাকিব হোসেন, প্রকল্পে ভারী যন্ত্রপাতি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ইফসকনের মালিক ইফতেখার হোসেন, হেড অব অপারেশন আজহারুল ইসলাম মিঠু, প্রকল্প এলাকার নিরাপত্তা নিশ্চিতের দায়িত্বে থাকা ফোর ব্রাদার্স গার্ড সার্ভিসের ট্রাফিকম্যান আফরোজ ও রুবেল, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সিজিজিসির সেফটি ইঞ্জিনিয়ার জুলফিকার আলী, প্রকল্প এলাকায় নিরাপত্তা নিশ্চিত এবং হেভি ইকুইপমেন্ট সরবরাহের দায়িত্বে নিয়োজিত থাকা সিজিজিসির প্রকিউরমেন্ট অফিসার মঞ্জুরুল ইসলাম, ক্রেন সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান বিল্ড ট্রেড কোম্পানির ব্যবস্থাপক তোফাজ্জল হোসেন ওরফে তুষার ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা রুহুল আমিন মৃধা।
আসামিপক্ষের আইনজীবীরা তাদের রিমান্ড বাতিল করে জামিনের আবেদন করলে আদালত জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করেন।
গত ১৬ আগস্ট মঙ্গলবার ভোর ৫টায় এ ঘটনায় নিহত রিয়া আক্তারের মামা আফরান মণ্ডল বাবু বাদী হয়ে উত্তরা (পশ্চিম) থানায় মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় ক্রেনচালক, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সিজিজিসির (চায়না) সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ এবং প্রকল্পের নিরাপত্তা নিশ্চিতে দায়িত্বপ্রাপ্তদের আসামি করা হয়। কারও নাম উল্লেখ করা হয়নি।
রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে যারা গ্রেপ্তার হয়েছেন, তারা এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় তাদের সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে তথ্য দিয়েছেন। দুর্ঘটনার প্রকৃত কারণ এবং তাঁদের সঙ্গে আর কারা সংশ্লিষ্ট তা যাচাই-বাছাই করার জন্য প্রত্যেককে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ প্রয়োজন। বলা হয়, আসামিরা গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে নিয়োজিত থাকা সত্ত্বেও দুর্ঘটনায় সঙ্গে সঙ্গে তারা পালিয়ে যান।
ওই ঘটনায় মারা যায়, গাড়ির ভেতরে থাকা আইয়ুব হোসেন রুবেল, ফাহিমা আক্তার, ঝর্ণা আক্তার, জান্নাতুল ও জাকারিয়া মৃত্যুবরণ করেন। পরে গত বুধবার এই ১০ জনকে ঢাকা, গাজীপুর, সিরাজগঞ্জ ও বাগেরহাটে পৃথক অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়।