নিজস্ব প্রতিবেদক:
নিত্যপণ্যের বাড়তি দাম রুখতে অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে কঠোর হচ্ছে সরকার। সরকারের এজেন্সি, জেলা প্রশাসক ও বাজার মনিটরিং টিমগুলোকে এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশ দিয়েছেন।
রোজার আগে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাড়তি দাম নেওয়া ঠেকাতে অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে এই ‘অ্যাকশন’ শুরু হচ্ছে বলে ঘোষণা দিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। আসন্ন পবিত্র রমজান উপলক্ষে পণ্যের মূল্য, আমদানি ও মজুদ পরিস্থিতি নিয়ে বুধবার সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থা, এজেন্সি ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক শেষে বাণিজ্যমন্ত্রী সাংবাদিকদের এমন তথ্য জানান। দুপুর আড়াইটা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, মধ্যস্বত্বভোগীরা ভোজ্যতেল অবৈধ মজুদ করছে। বেশি মুনাফার আশায় তেলের বোতল কেটে লুজ হিসেবে খোলা বাজারে বিক্রি করা হচ্ছে। অন্যান্য পণ্যের বাজারেও অসাধু ব্যবসায়ীরা নানা কৌশল করছে। ফলে সরকারের নির্ধারিত দামে ভোজ্যতেলসহ অন্যান্য পণ্য বেশি মূল্যে বিক্রি হচ্ছে।
তিনি বলেন, আর একারণে আগামী ৩১ মে থেকে সয়াবিন এবং ৩১ ডিসেম্বর পামঅয়েল তেল বাজারে খোলা বিক্রি নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে ভৈঠকে। এটি বাস্তবায়নে বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয় যৌথভাবে কাজ করছে।
মন্ত্রী জানান, বৈঠকে ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তর, টিসিবি, প্রতিযোগিতা কমিশন, সরকারের এজেন্সিগুলোকে ডাকা হয়েছিল। ব্যবসায়ীরা যাতে পণ্যের যৌক্তিক মূল্য মেনটেইন হয় এবং কেউ যাতে পণ্যের বাজারে কোনো খারাপ প্র্যাকটিস না করে সেবিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশের কথা তাদের বলা হয়েছে।
টিপু মুনশি বলেন, ভোগ্যপণ্যের বাজারে কোনো কালো হাতের প্রভাব বিস্তার করতে দেওয়া হবে না। কোনোভাবে অসাধু ব্যবসায়ীদের বিচরণ করতে দেওয়া হবে না। এ জন্য যতটুকু যেতে হয় যাব এবং যত শক্ত হওয়া দরকার সেটি করা হবে। ইতোমধ্যে কয়েকটি পণ্যের ক্ষেত্রে অসাধু ব্যবসায়ীর কৌশল ধরা পড়েছে।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রশাসকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি সরকারের এজেন্সি ডিজিএফআই, এনএসআইকে বলা হয়েছে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য। সরকার এ বিষয়ে কঠোর অবস্থানে রয়েছে। সরকার ব্যবসায়ীদের সুবিধা দেবে, কিন্তু এর মানে ব্যবসায়ীরা নিজেদের ইচ্ছামতো সবকিছু করবে তা কিন্তু নয়।
এসময় মন্ত্রী জানান, এখন থেকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় আন্তর্জাতিক বাজার মূল্য ও দেশি মূল্য যৌক্তিকতা তুলে প্রতি মাসে তথ্য প্রকাশ করবে। এতে কোন পণ্যের দাম বেশি রাখা হচ্ছে সবাই সহজে ধরতে পারবে। নিত্যপণ্যের বাড়তি দামের বিষয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা তৈরির বিষয়ে গণমাধ্যমের ভূমিকার বিষয়েও দৃষ্টিপাত করেন বাণিজ্যমন্ত্রী।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষের সভাপতিত্বে প্রতিযোগিতা কমিশনের চেয়ারপারসন মো. মফিজুল ইসলাম, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড টেরিফ কমিশনের চেয়ারম্যান (সচিব) মো. আফজাল হোসেন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সদস্য মো. মাসুদ সাদিক, এফবিসিসিআইর প্রেসিডেন্ট জসিম উদ্দিন, টিসিবির চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আরিফুল হাসান, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (আইআইটি) এএইচএম সফিকুজ্জামান সভায় উপস্থিত ছিলেন।