স্বাস্থ্য প্রতিবেদক:
ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন (ডব্লিউএইচও) সতর্ক করে দিয়ে জানিয়েছে, সপ্তাহে যারা ৫৫ ঘণ্টার বেশি কাজ করেন তারা স্বাস্থ্যগত ঝুঁকিতে রয়েছেন। এমনকি বেশি কাজ করলে মৃত্যুর ঝুঁকিও বাড়ে। চীন, জাপান এবং অস্ট্রেলিয়াসহ মোট ১৯৪টি দেশের কর্মজীবী মহিলা এবং পুরুষদের নিয়ে ২০০০ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত একটি সমীক্ষা করা হয়। এতে দেখা গেছে, প্রতিযোগিতার দৌড়ে পিছিয়ে না পড়ার প্রবণতায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাজ করা ১০০০ জনের মধ্যে একশো জনই হৃদরোগে ভোগেন। তাদের মধ্যে প্রাণহানিও হয় বেশিরভাগ মানুষের।
২০১৬ সালে মোট ৭ লক্ষ ৪৫ হাজার মানুষের প্রাণহানি হয়েছে হৃদরোগে। তাদের মধ্যে অধিকাংশ দিনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাজ করতেন। ডব্লিউএইচও-এর এনভায়রনমেন্ট, ক্লাইমেট চেঞ্জ এবং হেল্থ বিষয়ক বিভাগের প্রধান মারিয়া নাইরার মতে, প্রতি সপ্তাহে ৫৫ ঘণ্টা অথবা তার বেশি কাজ করলেই হতে পারে জটিল ধরনের শারীরিক সমস্যা। প্রাণহানি হওয়াও অসম্ভব কিছুই নয়। কর্মজীবীদের স্বাস্থ্যের দিকে খেয়াল রাখতে তাই এই সংক্রান্ত প্রচার বাড়ানো প্রয়োজন বলেও দাবি তার।
মূলত মধ্যবয়স্কদের শরীরেই অতিরিক্ত কাজের ফলে রোগ জাঁকিয়ে থাবা বসাচ্ছে বলেও দাবি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার। সপ্তাহে ৫৫ ঘণ্টারও বেশি কাজ করা যারা প্রাণ হারাচ্ছেন তাদের মধ্যে ৭২ শতাংশ মানুষই মধ্যবয়স্ক।
সমীক্ষায় পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, সপ্তাহে যারা ৫৫ ঘণ্টা কাজ করেন তাদের হৃদরোগের ঝুঁকি ৩৫ শতাংশ এবং যারা সাপ্তাহিক ৩৫-৪০ ঘণ্টা কাজ করেন তাদের মধ্যে অসুস্থতার ঝুঁকি অনেকটাই কম। মাত্র ১৭ শতাংশ মানুষ রোগ ভোগ করেন। করোনা পরিস্থিতিতে বিপর্যস্ত গোটা দেশ। যা প্রভাব ফেলেছে কর্মক্ষেত্রে। চাকরি হারিয়েছেন বহু মানুষ। তাই বেসরকারি সংস্থার কর্মীদের মধ্যে কাজ টিকিয়ে রাখার প্রবণতা বাড়ছে। এই পরিস্থিতিতে শরীরের কথা না ভেবেই কর্মীদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাজ করার সম্ভাবনাও তৈরি হচ্ছে। আর তার ফলে সমস্যা আরও গুরুতর আকার নিতে পারে বলেই মনে করছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কর্তারা।