নিজস্ব প্রতিবেদক:
বিশেষজ্ঞরা বলেন, বাংলাদেশে যারা মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যায় ভোগের তাদের বেশিরভাগেই কখনোই চিকিৎসা নিতে যান না। আর যারা চিকিৎসা নিতে যান তারা সমস্যঅ দেখা দেখার প্রথম দিকে নয়, একেবারে শেষ মুহূর্তে চিকিৎসকের শরাণাপন্ন হন। সমাজে হেয় হওয়ার ভয়, স্বাস্থ্যসেবার অভাব এবং অসচেতনতার কারণে বিশাল পরিমাণ মানুষ মানসিক স্বাস্থ্য চিকিৎসার বাইরে রয়েছেন বলেও মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
মানসিক সমস্যার ৮টি কারণ তুলে ধরা হলো-
১. প্রদাহ থেকে বিষণ্নতা : প্রদাহের কারণে বিষণ্নতা দেখা দিতে পারে। মস্তিষ্কে প্রদাহ ও বিষণ্নতা এতে অপরের সঙ্গে যুক্ত। সাইটোকাইনস নামে এক ধরনের প্রোটিন উৎপাদনের কারণে এটি ঘটে। এই প্রোটিন খুব বেশি উৎপন্ন হলে তা স্বাস্থ্যের জন্য খুব ক্ষতিকর হতে পারে। এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বিষণ্নতা।
২. জৈবিক প্রক্রিয়ায় ঘটতে পারে : ইউনিভার্সিটি অব গ্রানাদার বিজ্ঞানীরা ৩০টি গবেষণাপত্রের বিশেষণ করে দেখিয়েছেন, অক্সিডেটিভ স্ট্রেসের কারণে মানসিক সমস্যা দেখা দেয়। শরীরে যখন যথেষ্ট পরিমাণ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে না তখন কৌষিক প্রক্রিয়ায় এটি ঘটে।
৩ : বংশগত কারণে : কিছু মানসিক অবস্থা সিজোফ্রেনিয়া এবং অ্যাংজাইটির মতো অসুখ বংশগতভাবে আসতে পারে। জেনেটিক কারণ এর জন্য দায়ী।
৪. দৃষ্টিভঙ্গিগত সমস্যা : এক গবেষণায় দেখা যায়, যাদের অ্যাংজাইটি রয়েছে তারা সবকিছুকে ভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে বিচার করে। একটি আবেগময় ঘটনা শেষ হওয়ার পর অ্যাংজাইটিতে আক্রান্তরা বেশ নমনীয় হয়ে পড়ে। তখন মস্তিষ্ক নতুন কিছু মধ্যে পার্থক্য বের করতে পারে না। তাতে আক্রান্ত ব্যক্তি দুশ্চিন্তায় পড়ে যান।
৫. জেনেটিক মিউটেশন : এমনকি জন্মের সময় শিশুর মধ্যে মাসিক অসুস্থতা চলে আসতে পারে। ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা দেখিয়েছেন, গর্ভে শিশু বৃদ্ধির সময় যাদের জেনেটিক মিউটেশন ঘটেছে তাদের মধ্যে সিজোফ্রেনিয়া দেখা গেছে। এটি গর্ভে মস্তিষ্ক গঠনের ওপর ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করে।
৬. অনিয়ন্ত্রিত মস্তিষ্কের কার্যক্রম : মস্তিষ্কের কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণে না থাকার কারণে প্যারালাইজিং ফোবিয়া দেখা দিতে পারে। মূলত মস্তিষ্কের অ্যামিগডালা অংশের অতিমাত্রার প্রতিক্রিয়ার কারণে এমটি হতে পারে। এ অংশটি আবেগ নিয়ন্ত্রণ করে।
৭. উচ্চমাত্রার সেরোটনিনের ক্ষরণ : ২০১৫ সালের এক গবেষণায় দেখা যায়, শরীরে অতিমাত্রায় সেরোটনিন হরমোন ক্ষরণের কারণে সোস্যাল অ্যাংজাইটি দেখা দিতে পালে। সুইডেনের উপসালা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা পরীক্ষায় দেখেছেন,যাদের মস্তিষ্কের অ্যামিগডালা অংশ এই হরমোনের বেশি নিঃসরণ ঘটায় তারা সমাজের নানা বিষয় নিয়ে অযথাই চিন্তিত হয়ে পড়েন।
৮. মানসিক অসুস্থতার দায় রোগীর নয় : অনেকেই মনে করেন মানসিক সমস্যার জন্য রোগী নিজে দায়ী। কিন্তু এটা ঠিক নয়। কারণ কোনও রোগই কেউ ডেকে আনে না। এটা আক্রান্ত ব্যক্তির দোষ নয়। এর জন্য সময়মতো যথাযথ চিকিৎসা জরুরি।