স্বাস্থ্য ডেস্ক:
অনেকেই সকালে উঠে না খেয়ে দিনের অনেকটা সময় কাটিয়ে দেন। কেউ আবার অফিসে বেরোনোর তাড়া বা ঘরের কাজের চাপে দেরি করে নাস্তা করেন। কেউ আবার সকাল আর দুপুরের খাবার একবারেই খান। কেউ কেউ ভাবেন সকালের নাস্তা এড়ালে ওজন কমানো যায়।
কিন্তু এটা একেবারেই ভুল ধারণা। কারণ সকালের দিকে শরীরের বিপাকক্রিয়ার হার বেশি থাকে৷ ফলে যা খাওয়া হয় তা হজম হয়ে যায়৷ ক্যালরিও পোড়ে তাড়াতাড়ি৷
যারা সকালের নাস্তা করেন না, স্বাভাবিকভাবেই তারা দুপুরে অতিরিক্ত খেয়ে ফেলেন৷ সকালের খাবার খেলে এই অতিরিক্ত ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণ করা যায়। আবার এটি শরীরের শক্তি বাড়াতেও সাহায্য করে৷
এছাড়াও নিয়মিত সকালের নাস্তা করলে ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ ইত্যাদিও নিয়ন্ত্রণে থাকে৷
সকালের নাস্তা না করলে যেসব শারীরিক সমস্যা হয়-
হৃৎপিণ্ডের ক্ষতি:
দিনের পর দিন সকালের নাস্তা না করলে হৃদরোগে আক্রান্ত হতে পারেন। একটি গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব পুরুষ সকালে নাস্তা এড়িয়ে যান তাদের মধ্যে ২৭ শতাংশের বেশি হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। স্বাস্থ্যকর নাস্তা হৃদরোগের সম্ভাবনা কমিয়ে দেয়।
টাইপ-২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি:
হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটি স্কুল অফ পাবলিক হেলথ-এর গবেষণায় দেখা গেছে, খাওয়া-দাওয়ার সঙ্গে স্বাস্থ্যের নিবিড় যোগ রয়েছে। প্রায় ছয় বছর ধরে ৪৬ হাজার ২৮৯ জন নারীর ওপর গবেষণা করে দেখা গেছে, যেসব নারীর সকালের নাস্তা করার অভ্যাস আছে তাদের মধ্যে টাইপ-২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বেশি।
ওজন বাড়বে:
যদি ওজন কমাতে চান তাহলে ভুলেও সকালের নাস্তা এড়াবেন না। কারণ সকালের নাস্তা এড়ালে ক্ষুধা বাড়বে। তখন সামনে যা পাবেন তাই খেতে ইচ্ছে করবে।
মুড সুইং ও শক্তির ঘাটতি:
সকালের নাস্তা না করলে মুড সুইং ও শক্তির ঘাটতি দুটিতেই প্রভাব পড়ে। গবেষণায় দেখা গেছে, যারা সকালের নাস্তা করেন না তারা সব থেকে বেশি ক্লান্তিবোধ করেন এবং ভুলে যান বেশি। সকালের খাবার এড়ালে শক্তি কমে যেতে পারে এবং স্মৃতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। মেজাজও খারাপ থাকতে পারে।
চুলের ক্ষতি:
সকালের নাস্তা এড়ালে প্রোটিনের মাত্রা ভয়ঙ্করভাবে কমে যায় শরীরে, যা কেরাটিনের মাত্রায় প্রভাব ফেলে। কেরাটিন কমে গেলে চুলের বৃদ্ধি কমে যায়, চুল পড়তে শুরু করে।
বিপাকে প্রভাব ফেলে:
৮-১০ ঘণ্টা ঘুমানোর পর সকালের নাস্তা শরীরে যায়। ঘুমানোর বেশ কিছুক্ষণ আগে রাতের খাবার খাওয়া হয়। প্রায় ১২ ঘণ্টা শরীর খাবার পায় না। সকালে নাস্তা করলে তাই তাড়াতাড়ি হজম হয়ে যায়।