নিজস্ব প্রতিবেদক:
কুয়েতের কারাগারে আটক লক্ষ্মীপুর-২ আসনের আলোচিত সাংসদ কাজী সহিদ ইসলাম পাপুল, তার স্ত্রী এমপি সেলিনা ইসলাম, মেয়ে ওয়াফা ইসলাম ও শ্যালিকা জেসমিন প্রধানের নামে ৮ ব্যাংকের মোট ৬১৩টি ব্যাংক হিসাব জব্দ করতে চিঠি দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক।
বুধবার দুদকের প্রধান কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. সালাহউদ্দিনের সই করা চিঠি বাংলাদেশ ব্যাংক বরাবর পাঠানো হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে কমিশনের জনসংযোগ বিভাগ। অ্যাকাউন্ট জব্দ করতে আজ সকালে আদালতের অনুমতি পায় দুদক।
চিঠিতে এম পি পাপুল, তার স্ত্রী মেয়ে ও শ্যালিকার মোট ৮টি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে এ বিষয়ে নির্দেশনা দেয়ার অনুরোধ করা হয় সংস্থাটির পক্ষ থেকে।
অন্যদিকে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে তাদের নামে থাকা ৩০২৬.৭৬ শতাংশ (৩০.২৭ একর জমি) ও গুলশানের একটি ফ্ল্যাট অ্যাটাচমেন্ট এর সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুদক।
এর আগে গত ১১ নভেম্বর লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সাংসদ কাজী সহিদ ইসলাম পাপুল এবং তার স্ত্রী এমপি সেলিনা ইসলাম, মেয়ে ওয়াফা ইসলাম ও শ্যালিকা জেসমিন প্রধানের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক।
মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, আসামিদের বিরুদ্ধে ২ কোটি ৩১ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ ও ১৪৮ কোটি টাকার লন্ডারিংয়ের অভিযোগ আনা হয়েছে। কোনো আয়ের উৎস না থাকলেও পাপুলের শ্যালিকা জেসমিন প্রধানের পাঁচটি হিসাবের মাধ্যমে গত আট বছরে মানি লন্ডারিং হয় ১৪৮ কোটি টাকা। যার কোনো বৈধ উৎস তিনি দেখাতে পারেননি।
এছাড়া জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করে তা ভোগদখলে রাখার অপরাধে প্রাথমিকভাবে প্রমাণ হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে দুদক আইন ২০০৪ এর ২৭ (১) ধারায় অভিযোাগ এবং প্রায় ১৪৮ কোটি টাকা হস্তান্তর, রূপান্তর ও স্থানান্তরের মাধ্যমে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধে আইনের ২০১২ এর ৪ (২) ও ৪ (৩) ধারায় অভিযোগ আনা হয় এজাহারে।
চলতি বছরের ৬ জুন রাতে কুয়েতের মুশরেফ আবাসিক এলাকা থেকে দেশটির অপরাধ তদন্ত বিভাগ এমপি শহিদুল ইসলাম পাপুলকে গ্রেপ্তার করে। বাংলাদেশের এই সংসাদের বিরুদ্ধে তার বিরুদ্ধে মানব ও অর্থপাচারে অভিযোগ ছিলো বলে জানায় আরব সংবাদ মাধ্যমগুলো।
অন্যদিকে মানব পাচারের অভিযোগে কুয়েতে গ্রেপ্তার সংসদ সদস্য কাজী শহিদ ইসলাম পাপুল এবং তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে গতকাল মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) অর্থপাচারের অভিযোগে মামলা করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ-সিআইডি।
পাপুল ছাড়াও ওই মামলায় তার মেয়ে ওয়াফা উসলাম, শ্যালিকা জেসমিন প্রধান, ভাই কাজী বদরুল আলম লিটন, ব্যক্তিগত কর্মচারী মোহাম্মদ সাদিকুর রহমান মনির, জেসমিন প্রধানের কোম্পানি জে ডব্লিউ লীলাবালী, কাজী বদরুল আল লিটনের মালিনাধীন কোম্পানি জব ব্যাংক ইন্টারন্যাশনাল এবং কোম্পানির ম্যানেজার গোলাম মোস্তফাসহ অজ্ঞাতপরিচয় আরও ৫-৬জনকে আসামি করা হয়েছে।